যে সকল কারণে নামাজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশী প্রিয় আমল
যে সকল কারণে নামাজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশী প্রিয় আমল
‘নামাজ’ হচ্ছে ঈমানের পর আল্লাহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হুকুম। ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নামাজ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন। কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি ৮২ বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
![]() |
নামাজের চিত্র |
তাই
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজকে ঈমানের পর স্থান দিয়েছেন। নামাজের গুরুত্ব ও ফায়েদা সম্পর্কে
সাহাবায়ে কেরামের সামনে অসংখ্য হাদিন বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে একটি হলো-
হজরত
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- (হে আল্লাহর রাসুল!) আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়
আমল কোনটি? রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘নামাজ’। (বুখারি ও মুসলিম)
উল্লেখিত
হাদিস বর্ণনা প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার আল্লামা মোল্লা আলি ক্বারী
রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘এ
হাদিসের মাধ্যমেই আলেমগণ ঈমানের পর নামাজকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে করেন।
হজরত
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ
তাআলা মনোনীত সর্বোত্তম আমল হলো নামাজ। অতএব যে বেশি বেশি নামাজ পড়তে
সক্ষম, সে যেন বেশি বেশি
নামাজ পড়ে। (তাবারানি)
প্রিয়নবি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের গুরুত্ব বুঝাতে হাদিসের মাধ্যমে একটি
উপমা প্রদান করেছেন।
হজরত
আবু যর গিফারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক সময় শীতকালে বাইরে (কোথা্র)
তাশরিফ আনলেন। তখন
গাছের পাথা ঝরার মওসুম ছিল। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গাছের একটি ডাল হাত দিয়ে
ধরলেন। ফলে তার পাতা আরও
বেশি ঝরতে লাগল।
অতঃপর
তিনি বললেন, হে আবু যর! আমি
বললাম, হে আল্লাহর রাসুল!
আমি উপস্থিত। তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন-
‘মুসলমান বান্দা যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নামাজ আদায় করে, তখন তার থেকে পাপসমূহ ঝরে পড়ে; যেমন এ গাছের পাতা ঝরে পড়ছে। (মুসনাদে আহমদ)
নামাজই
একমাত্র ইবাদত; যার মাধ্যমে মানুষ
দুনিয়ার সব কাজ ছেড়ে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে যায়। এ নামাজই মানুষকে দুনিয়ার সব পাপ-পংকিলতা
থেকে ধুয়ে মুছে পাক-সাফ করে দেয়। দুনিয়ার সব অন্যায়-অনাচার থেকে হেফাজত করে।
পরিশেষে…
নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া মুমিন মুসলমানরে ঈমানের দাবি ও ফরজ
ইবাদত। নামাজি ব্যক্তিই
হলো সফল। যার
সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন প্রিয়নবি। তিনি বলেছেন-
‘যে ব্যক্তি নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে; কেয়ামতের দিন ওই নামাজ তার জন্য নূর হবে
এবং হিসেবের সময় নামাজ তার জন্য দলিল হবে এবং নামাজ তার জন্য নাজাতের কারণ হবে।
পক্ষান্তরে
যে ব্যক্তি নামাজের প্রতি যত্নবান হবে না- কেয়ামতের দিন নামাজ তার
জন্য নূর ও দলিল হবে না।
তার জন্য নাজাতের কোনো সনদও থাকবে না। বরং ফেরাউন, হামান ও উবাই ইবনে খালফের সাথে তার হাশর
হবে।’
আল্লাহ
তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সহিহ তরিকায় সঠিক পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করার
তাওফিক দান করুন। ফরজ
নামাজ আদায়ের পাশাপাশি নফল নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। নামাজকে পরকালের নাজাতের ওসিলা
বানিয়ে দিন। আমিন।
No comments